দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে অবস্থানের পর দেশে ফিরছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। আগামীকাল রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে দিল্লি থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালনকালে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী’ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সাবেক এই যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীকে। দীর্ঘ ৬২ দিন পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন তিনি।
দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে উদ্ধারের পর সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর মামলার কার্যক্রম চলার পর ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলায় আদালত নির্দোষ সাব্যস্ত করে খালাস দেন সালাহউদ্দিন আহমেদকে। ছয় মাস পরে আবার ভারত সরকার ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। আবারও প্রায় চার বছর সময়ক্ষেপণের পরে গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় তিনি শিলং জজকোর্ট থেকে খালাস পান এবং তাকে দ্রুত সময়ে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে পাসপোর্ট না থাকায় সালাহউদ্দিন আহমেদ পরে দেশে ফিরতে ট্রাভেল পারমিটের জন্য গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেন। পরে পাসপোর্টের বিকল্প হিসেবে গত বছরের জুনে হাইকমিশন থেকে তাকে তিন মাসের ট্রাভেল পাস দেওয়া হয়। তবে এই ট্রাভেল পাস দিয়ে তার ভারতের ইমিগ্রেশন পার হওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে, আদালতের রায় সংযুক্ত করে মেঘালয় সরকার এ বিষয়ে গত বছরের ২৪ মার্চ দিল্লি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সালাহউদ্দিনকে দেশে ফেরত পাঠাতে ছাড়পত্রের জন্য চিঠি দিয়েছিল। এর আগে ২০১৮ সালে যখন ভারতের বিচারিক আদালত থেকে তিনি রায় পেয়েছিলেন, তখনও মেঘালয় সরকার এভাবে চিঠি দিয়েছিল। তখনও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জবাব দেয়নি।
তবে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সালাহউদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার পথ সুগম হয়। আইনি জটিলতা কাটিয়ে এবার তিনি নিজ দেশে ফিরছেন
পাঠকের মতামত